Pages

Friday, October 3, 2014

নাফাখুম





নাফাখুম




সাধারণ পরিচিতি ও অভিজ্ঞতা

বান্দরবান জেলার থানচি উপজেলার রেমাক্রি স্থানটি সাঙ্গু নদীর উজানে একটি মারমা বসতীমারমা ভাষায় 'খুম' মানে হচ্ছে জলপ্রপাতনাফাখুম জলপ্রপাতরেমাক্রি জলপ্রপাত নামেও এটা অনেকের কাছে পরিচিতরেমাক্রি খালের পানি প্রবাহ এই নাফাখুমে এসে বাঁক খেয়ে হঠাৎ করেই নেমে গেছে প্রায় ২৫-৩০ ফুট, প্রকৃতির খেয়ালে সৃষ্টি হয়েছে চমৎকার এক জলপ্রপাত! ভরা বর্ষায় রেমাক্রি খালের জলপ্রবাহ নিতান্ত কম নয়, প্রায় যেন উজানের সাঙ্গু নদীর মতইনাফাখুম কিছুটা দুর্গমবিশেষ করে, বৃষ্টিবাদলার দিনগুলোয়রেমাক্রি থেকে তিন ঘন্টার হাঁটা পথ পাড়ি দিয়ে যেতে হয় আশ্চর্য সুন্দর সেই জলপ্রপাতে, গত আগস্টে ছিল আমাদের নাফাখুম অভিযানপ্রথমে ঢাকা থেকে বান্দরবনসেখান থেকে ৭৯ কিলোমিটারের পথ গাইড মংখাই আমাদের সঙ্গীমংখাইয়ের সঙ্গে কথা বলে আগেই রুট ঠিক করেছি শুরু হলো বান্দরবন থেকে গাড়ির চড়াই-উতরাই পেরোনো পথপাহাড়ি পথের ধারে মিশ্র ফল বাগান, আদিবাসীদের চলাচল সবই মুগ্ধ করেএকে একে আমরা পার হই মিলনছড়া, নীলগিরি, চিম্বুক, বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রাস্তা 'পিক ৬৯', বাঘাইছড়ামাঝেমধ্যে আমরা থামি, ছবিটবি তুলি; আবার চলতে থাকি আনন্দের জিম্মায়ঘণ্টাতিনেক পরে গাড়ি পৌঁছায় থানচির এপারে শঙ্খ নদীর পাড়ে পাহাড়িদের কাছে এ নদীর নাম সাঙ্গুএই সাঙ্গু বেয়েই আমাদের উঠতে হবে রেমাক্রি বাজারে



গাড়ি ও নৌকার পালা শেষ রেমাক্রি বাজারেইএবার ট্রেকিং মানে হাঁটাপথ রেমাক্রি বাজারে সাঙ্গু বাঁক নিয়েছেএ বাঁকে এসে পড়েছে রেমাক্রি খাল খালের শুরুটা নাফাখুম জলপ্রপাতেপাথুরে খালের দুই পাড় হাঁটার জন্য বন্ধুর মাঝেমধ্যে জুম চাষের পাহাড়ে বা ঝিরির পানিতে স্নানরত এক-দুজন আদিবাসী ছাড়া কোনো মানুষও চোখে পড়ে নাএরপর পথ আরো জটিলকাদা, পাথরের সঙ্গে যোগ হয়েছে ঝোপঝাড়আরো প্রায় আধাঘণ্টা হাঁটার পর শোনা গেল পানির শব্দদেখা মিলল শুভ্র জলরাশির নাফাখুম জলপ্রপাতপ্রায় ১৫-২০ ফুট ওপর থেকে পানি পড়ছে নিচের রেমাক্রি খালেতীব্র স্রোত তৈরি করে চলে যাচ্ছে সাঙ্গু নদীর দিকে জলপ্রপাতের প্রস্থ ৪০ ফুটের কম নাদুদিকে বড় পাথরের দেয়ালএমন জলপ্রপাত বাংলাদেশে, বিশ্বাসই যেন হতে চায় নাদেড় ঘণ্টার মতো আমরা নাফাখুম দেখলাম, মুগ্ধ হলামআবার হাঁটতে হবে আট কিলোমিটার বন্ধুর পথদিনের আলো থাকতেই পেঁৗছাতে হবে রেমাক্রি বাজারেফেরার সময় বিরতিহীন হাঁটাযে পথে যেতে সময় লেগেছিল ছয় ঘণ্টা, ফিরতে লাগল দেড় ঘণ্টা



যেভাবে যাবেন


বাসে ঢাকা থেকে বান্দরবান, ভাড়া ৩২০ থেকে ৩৫০ টাকাচান্দের গাড়ি বা ভাড়া করা ফোর হুইল ড্রাইভ গাড়িতে থানচিচান্দের গাড়ির ভাড়া জনপ্রতি ২০০ আর গাড়ি ভাড়া করলে তিন হাজার থেকে ৩ হাজার ৫০০ টাকাথানচি থেকে রেমাক্রি নৌকায় যাওয়া-আসা, ভাড়া ৪ হাজার থেকে পাঁচ হাজার টাকা


থাকা :


থানচি, তিন্দু বা রেমাক্রি বাজারে কাঠের ঘরে থাকা যাবেথাকার জন্য টাকা লাগবে না, তবে খাওয়ার জন্য প্রতি বেলায় জনপ্রতি লাগবে ১০০ থেকে ১৫০ টাকাএছাড়া গাইডের সহযোগিতায় আদিবাসী গ্রামেও থাকা যেতে পারেবান্দরবানে রোমাঞ্চকর এরকম দারুণ সুন্দর জায়গাগুলো নিয়ে আমরা তো গর্ব করতেই পারি, বেরিয়ে যেতে পারি অভিযানে 


ছবিঘরঃ


নাফাখুম (চিত্র-১)



নাফাখুম (চিত্র-২)



নাফাখুম (চিত্র-৩)



নাফাখুম (চিত্র-৪)



নাফাখুম (চিত্র-৫)



নাফাখুম (চিত্র-৬)


নাফাখুম (চিত্র-৭)

No comments: