পলি পড়ে নতুন ভূমি গঠন
সম্প্রতি বাংলাদেশ সরকারের প্রাকৃতিক
সম্পদবিষয়ক গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড জিওগ্রাফিক্যাল ইনফরমেশন সার্ভিসেস (CEGIS)-এ গবেষণাপ্রসূত ফলাফল অনুযায়ী জানাচ্ছে যে, হিমালয় থেকে প্রতি বছর ১০০
টন পলি এসে সমুদ্রে পড়ে আর তা সমুদ্রের জোয়ার-ভাটায়
এসে উপকূলে জমা হয়। হিমালয়কেন্দ্রিক
নদীগুলো হয়ে যে পলি বাংলাদেশে আসে, তার তিন
ভাগের এক ভাগ দেশের ভেতরের নদী
ও নদীতীরে জড়ো হয়। এর এক অংশ নোয়াখালী, খুলনা, সাতক্ষীরা, যশোর এলাকার উপকূলীয় নদী, এবং বাকি অংশ সমুদ্র হয়ে (সোয়াচ অব নো গ্রাউন্ড) ইন্দোনেশিয়ার দিকে চলে যায়, এভাবে নতুন
ভূমি জেগে ওঠে। এছাড়াও ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দে আসামে ভূমিকম্পের পর হিমালয়ের একটি বিশাল
অংশের পলি হিমালয়-সৃষ্ট নদীগুলো দিয়ে বঙ্গোপসাগরে এসে পড়েছে। বিগত ৬৫ বছরে
এভাবে পলি জমা হয়ে বাংলাদেশের উপকূলে ১,৮০০ বর্গকিলোমিটার ভূমি জেগে উঠেছে। আগামী ১০০ বছরে সমুদ্রপৃষ্ঠের
উচ্চতা বেড়ে গিয়ে দেশের ভেতর দিয়ে বয়ে যাওয়া নদীগুলোতে পানির পরিমাণ বাড়লেও একই সঙ্গে পলির পরিমাণও বাড়বে। গবেষণায় এও দেখা গেছে যে, বাংলাদেশের ভূখণ্ডের মেঘনা হচ্ছে পৃথিবীর একমাত্র সক্রীয় বদ্বীপ এলাকা, যেখানে ভূমি এখনো (এপ্রিল ২০১০) গঠিত হচ্ছে। খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাট জেলার সীমানায় অবস্থিত পশুর, শিবসা ও বলেশ্বর নদী দিয়ে
প্রচুর পরিমাণ পলি এসে বাংলাদেশের ভূখণ্ডে জড়ো হচ্ছে। নোয়াখালী উপকূলে
সবচেয়ে বেশি ভূমি জেগে উঠেছে। ফলে দেশের
বেশিরভাগ উপকূল ও নদীর তীরবর্তী এলাকা ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা নেই। সিইজিআইএসের গবেষণা পরিচালক মমিনুল হক সরকার পরিচালিত 'মেঘনা এস্টুয়ারি-ইফেক্ট
অব ১৯৯৫ আর্থকোয়েক অ্যান্ড
ফিউচার ডেভেলপমেন্ট' এবং এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (ADB) আর্থিক সহায়তায় পরিচালিত আরেকটি গবেষণার প্রাথমিক ফলাফলের ভিত্তিতে তৈরি 'বাংলাদেশের নদীর ওপরে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব: মাঠপর্যায়ের গবেষণাভিত্তিক ফলাফল'শীর্ষক প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
|
সময়কাল
|
ভাঙ্গা
(বর্গ কিমি) |
গড়া
(বর্গ কিমি) |
মোট জেগে ওঠা ভূমি
(বর্গ কিমি) |
|
|
১৯৪৩:১৯৭৩
|
৮৯০
|
২১০০
|
১২১০
|
|
|
১৯৪৩:২০০৮
|
১১৮০
|
২৯৭০
|
১৭৯০
|
|
|
বাংলাদেশের উপকূলে ভাঙ্গা-গড়ার পরিসংখ্যান। সূত্র: CEGIS।
|
||||
No comments:
Post a Comment