Pages

Friday, September 26, 2014

কক্সবাজার



কক্সবাজার বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে অবস্হিত একটি পর্যটন শহরএটি চট্টগ্রাম বিভাগের কক্সবাজার জেলার অন্তর্গতকক্সবাজার তার নৈসর্গিক সৌন্দর্য্যের জন্য বিখ্যাতএখানে রয়েছে বিশ্বের দীর্ঘতম অবিচ্ছিন্ন প্রাকৃতিক বালুময় সমুদ্র সৈকত যা কক্সবাজার শহর থেকে বদরমোকাম পর্যন্ত একটানা ১২০ কি.মি. পর্যন্ত বিস্তৃতএখানে রয়েছে বাংলাদেশের বৃহত্তম সামুদ্রিক মৎস্য বন্দর এবং সাবমেরিন ক্যাবল ল্যান্ডিং স্টেশান


বাংলাদেশের সাবমেরিন কেবল ল্যান্ডিং স্টেশন কক্সবাজারে অবস্থিত

অবস্থান

কক্সবাজার চট্টগ্রাম শহর থেকে ১৫২ কিঃমিঃ দক্ষিণে অবস্হিত ঢাকা থেকে এর দূরত্ব ৪১৪ কি.মি.এটি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় পর্যটন কেন্দ্রদেশের রাজধানী ঢাকা থেকে সড়ক পথে এবং বাসযোগে কক্সবাজার যাওয়া যায় চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার অবধি রেললাইস স্থাপনের প্রকল্প গৃহীত হয়েছে

কক্সবাজার কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল

নামকরণ

আধুনিক কক্সবাজারের নাম রাখা হয়েছে ল্যাঃ কক্স (মৃত্যু ১৭৯৮) এর নামানুসারে যিনি ব্রিটিশ আমলে ভারতের সামরিক কর্মকর্তা ছিলেনএককালে কক্সবাজার পানোয়া  নামেও পরিচিত ছিল যার আক্ষরিক অর্থ হচ্ছে হলুদ ফুল এর আরো একটি প্রাচীন নাম হচ্ছে পালংকি

পর্যটন আকর্ষণ

পর্যটন শিল্পকে কেন্দ্র করে এখানে গড়ে উঠেছে অনেক প্রতিষ্ঠানবেসরকারি উদ্যোগে নির্মিত অনেক হোটেল, বাংলাদেশ পর্যটন কেন্দ্র নির্মিত মোটেল ছাড়াও সৈকতের নিকটেই দুটি পাঁচতারা হোটেল রয়েছেএছাড়া এখানে পর্যটকদের জন্য গড়ে উঠেছে ঝিনুক মার্কেটসীমান্তপথে মিয়ানমার (পূর্ব নাম - বার্মা), থাইল্যান্ড, চীন প্রভৃতি দেশ থেকে আসা বাহারি জিনিসপত্র নিয়ে গড়ে উঠেছে বার্মিজ মার্কেট
কক্সবাজারে বিভিন্ন উপজাতি বা নৃ-তাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী বাস করে যা শহরটিকে করেছে আরো বৈচিত্র্যময়এইসব উপজাতিদের মধ্যে চাকমা সম্প্রদায় প্রধানকক্সবাজার শহর ও এর অদূরে অবস্থিত রামুতে রয়েছে বৌদ্ধ ধর্মালম্বীদের পবিত্র তীর্থস্থান হিসেবে বৌদ্ধ মন্দিরকক্সবাজার শহরে যে মন্দিরটি রয়েছে তাতে বেশ কিছু দুর্লভ বৌদ্ধ মূর্তি আছেএই মন্দির ও মূর্তিগুলো পর্যটকদের জন্য অন্যতম আকর্ষণ ও কেন্দ্রবিন্দুকক্সবাজারে শুধু সমুদ্র নয়, আছে বাঁকখালী নামে একটি নদীওএই নদীটি শহরের মৎস্য শিল্পের জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণকক্সবাজার বাংলাদেশের সবচেয়ে স্বাস্থ্যকর স্থান হিসেবে বিখ্যাত

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত

কক্সবাজার সৈকতে সূর্যাস্ত

লাবণী পয়েন্ট
কক্সবাজার শহর থেকে নৈকট্যের কারণে লাবণী পয়েন্ট কক্সবাজারের প্রধান সমুদ্র সৈকত বলে বিবেচনা করা হয়নানারকম জিনিসের পসরা সাজিয়ে সৈকত সংলগ্ন এলাকায় রয়েছে ছোট বড় অনেক দোকান যা পর্যটকদের জন্য বাড়তি আকর্ষণ

হিমছড়ি

হিমছড়ি কক্সবাজারের ১৮ কি.মি. দক্ষিণে অবস্থিতভঙ্গুর পাহাড় আর ঝর্ণা এখানকার প্রধান আকর্ষণকক্সবাজার থেকে হিমছড়ি যাওয়ার পথে বামদিকে সবুজঘেরা পাহাড় আর ডানদিকে সমুদ্রের নীল জলরাশি মনোমুগ্ধকর দৃশ্যের সৃষ্টি করেবর্ষার সময়ে হিমছড়ির ঝর্ণাকে অনেক বেশি জীবন্ত ও প্রাণবন্ত বলে মনে হয়হিমছড়িতে পাহাড়ের চূড়ায় একটি রিসোর্ট আছে যেখান থেকে সাগরের দৃশ্য অপার্থিব মনে হয়হিমছড়ির প্রধান আকর্ষণ এখানকার ক্রিসমাস ট্রি সম্প্রতি হিমছড়িতে গড়ে উঠেছে বেশ কিছু পর্যটন কেন্দ্র ও পিকনিক স্পট

হিমছড়ী

ইনানী সমুদ্র সৈকত

দীর্ঘ সমুদ্র সৈকত ছাড়াও কক্সবাজারে সৈকত সংলগ্ন আরও অনেক দর্শনীয় এলাকা রয়েছে যা পর্যটকদের জন্য প্রধান আকর্ষণের বিষয়সৈকত সংলগ্ন আকর্ষণীয় এলাকাগুলোর মধ্যে রয়েছ, ইনানী সমুদ্র সৈকত যা কক্সবাজার থেকে ৩৫ কি.মি দক্ষিণে অবস্থিতঅভাবনীয় সৌন্দর্যে ভরপুর এই সমুদ্র সৈকতটি কক্সবাজার থেকে রাস্তায় মাত্র আধঘণ্টার দূরত্বে অবস্থিত পরিষ্কার পানির জন্য জায়গাটি পর্যটকদের কাছে সমুদ্রস্নানের জন্য উৎকৃষ্ট বলে বিবেচিতপশ্চিমে সমুদ্র আর পূর্বে পাহাড়ের এক অপূর্ব জায়গাটি বাংলাদেশের অন্যতম একটি পর্যটন আকর্ষণমেরিন ড্রাইভ সড়ক ধরে কক্সবাজার থেকে ইনানী যেতে হয় কক্সবাজার থেকে টেকনাফ পর্যন্ত দীর্ঘ একশো বিশ কিলোমিটার সমুদ্র সৈকতের মধ্যে সবচেয়ে আকর্ষণীয় ইনানী সৈকত

ইনানী সমুদ্র সৈকতে পর্যটকদের ভীড়

ইনানী সৈকত জোড়া বিশালাকার পাথর খণ্ড

কক্সবাজার মেরিন ড্রাইভ

ইতিহাস

নবম শতাব্দীর গোড়ার দিক থেকে ১৬১৬ সালে মুঘল অধিগ্রহণের আগে পর্যন্ত কক্সবাজার-সহ চট্টগ্রামের একটি বড় অংশ আরাকান রাজ্যের অন্তর্ভূক্ত ছিলোমুঘল সম্রাট শাহ সুজা পাহাড়ী রাস্তা ধরে আরাকান যাওয়ার পথে কক্সবাজারের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মুগ্ধ হন এবং এখানেই ক্যাম্প স্থাপনের আদেশ দেনতার যাত্রাবহরের প্রায় একহাজার পালঙ্কী কক্সবাজারের চকরিয়ার ডুলাহাজারা নামের স্থানে অবস্থান নেয়ডুলহাজারা অর্থ হাজার পালঙ্কীমুঘলদের পরে ত্রিপুরা এবং আরকান তার পর পর্তুগিজ এবং ব্রিটিশরা এই এলাকার নিয়ন্ত্রণ নেয়
কক্সবাজার নামটি এসেছে ক্যাপ্টেন হিরাম কক্স নামে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির এক অফিসারের নাম থেকেকক্সবাজারের আগের নাম ছিল পালংকিব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি অধ্যাদেশ, ১৭৭৩ জারি হওয়ার পর ওয়ারেন্ট হোস্টিং বাঙলার গভর্ণর হিসেবে নিয়োগ প্রাপ্ত হনতখন হিরাম কক্স পালংকির মহাপরিচালক নিযুক্ত হনক্যাপ্টেন কক্স আরাকান শরণার্থী এবং স্থানীয় রাখাইনদের মধ্যে বিদ্যমান হাজার বছরেরও পুরানো সংঘাত নিরসনের চেষ্টা করেনএবং শরণার্থীদের পুণর্বাসনে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি সাধন করেন কিন্তু কাজ পুরোপুরি শেষ করার আগেই মারা (১৭৯৯) যানতার পূর্নবাসন অবদানকে স্মরণীয় করে রাখতে একটি বাজার প্রতিষ্ঠা করা হয় এবং এর নাম দেয়া হয় কক্স সাহেবের বাজার কক্সবাজার থানা প্রথম প্রতিষ্ঠিত হয় ১৮৫৪ সালে এবং পৌরসভা গঠিত হয় ১৮৬৯ সালে

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমূহ

প্রাইমারী টিচার্স ট্রেনিং ইন্সটিটিউট( পি টি আই)

মেডিকেল কলেজঃ
১। কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ;

কলেজঃ
১। কক্সবাজার সরকারি কলেজ,
২। কক্সবাজার সরকারি মহিলা কলেজ,
৩। কক্সবাজার সিটি কলেজ,
৪। রামু কলেজ,
৫। কক্সবাজার পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট;

উচ্চ বিদ্যালয়ঃ
১। কক্সবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়,
২। কক্সবাজার সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়,
৩। চকরিয়া কোরক বিদ্যাপীঠ;

No comments: